শিরোনাম
মাসোহারা দিয়ে বেপরোয়া অবৈধ টেক্সি
Passenger Voice | ১১:২৩ এএম, ২০২০-১১-২১
নানা অনিয়ম নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ হয়, কিন্তু অনেকক্ষেত্রে কাজের কাজ কিছুই হয় না। তেমনই একটি অভিযোগ নগর ট্রাফিক বিভাগের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ গাড়িপ্রীতি রয়েছে নগর ট্রাফিকের। এসব গাড়িতে সরকার রাজস্ব হারালেও মাসোহারার মাধ্যমে নগরীতে বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে চট্টগ্রাম জেলায় বাণিজ্যিক নিবন্ধিত সিএনজি চালিত টেক্সি, অন্য জেলায় প্রাইভেট নিবন্ধিত এবং নিলামের গাড়ি।
গত ২৭ অক্টোবর ‘নিলাম, চট্টগ্রাম ও প্রাইভেট নিবন্ধিত টেক্সি নগরজুড়ে; মাসোহারা দিয়ে চলার অভিযোগ’ শীর্ষক সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে একিট টেক্সির ছবি প্রকাশ পায়। শুধু নিবন্ধন নম্বরটি মুছে নগর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ওই টেক্সি। প্রতিবেদন প্রকাশের পর কমেনি অবৈধ গাড়ি চলাচলও।
সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রাইভেট নিবন্ধিত সিএনজি টেক্সি রয়েছে প্রায় এক হাজারের মতো। কিন্তু বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রাইভেট নিবন্ধিত গাড়ি চলাচল করছে মহানগরীতে। বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, কুমিল্লা, ফেনী, নওগাঁ, গাজীপুর, বরিশাল জেলায় ‘দ’ সিরিয়ালে নিবন্ধিত গাড়ি দেখা যায় অহরহ। স্বাভাবিকভাবে বিআরটিএ থেকে বাণিজ্যিকভাবে নিবন্ধিত টেক্সির রং (কালার) সবুজ হয়ে থাকে। প্রাইভেট নিবন্ধিত টেক্সির রং হয় ভিন্ন। কিন্তু প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ‘দ’ সিরিয়ালে প্রাইভেট নিবন্ধিত গাড়িগুলো সবুজ রং ও নিরাপত্তা ঝালি ব্যবহার করে নগরীতে যাত্রীবহন করছে।
আবার মহানগরীতে মেট্রো হিসেবে ‘থ’ সিরিয়ালে বাণিজিকভাবে নিবন্ধিত গাড়িতেই নিরাপত্তা ঝালি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম জেলায় বাণিজ্যিকভাবে নিবন্ধিত গাড়িগুলোও অবৈধভাবে চলছে মহানগরীতে। অন্যদিকে চোরাই, কাগজপত্রহীন কিংবা আদালত থেকে স্ক্র্যাপ হিসেবে নিলামে কিনে চট্টগ্রাম মহানগরী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সিএনজিচালিত অসংখ্য টেক্সি।
গত ২৭ অক্টোবর প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি নিলাম গাড়ির ছবি প্রকাশিত হয়। দেওয়ানহাট মোড়ে ক্যামেরায় ধরা পড়া নিলাম গাড়িটির পেছনে লেখা ছিল বিআরটিএ নিবন্ধন নম্বর ‘চট্টমেট্রো-থ-১১-৫৩৭১’। এটিও নিরাপত্তা ঝালি (সিকিউরিটি নেট) সাঁটানো। গাড়িটিতে ‘অটোরিকশাটিতে ডিজিটাল নম্বর প্লেট না থাকলেও পেছনে ‘রাকিব সাকিব সজিব এক্সঃ’ লেখা রয়েছে। ওই নামের নীচের দিকে লেখা রয়েছে ‘নিলাম ক্রয় জিডি নং ৭৪৪’। নিলাম ক্রয় শব্দটি লেখার পাশাপাশি গাড়িটির নম্বর দেখে সন্দেহ তৈরি হলে যোগাযোগ করা হয় বিআরটিএতে। বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে গাড়িটির মেয়াদ ১৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০১৮ সালে ‘চট্টমেট্রো-থ-১১-৫৩৭১’ নম্বরের গাড়িটি বিআরটিএতে সারেন্ডার করে নতুন গাড়ির নিবন্ধন নেয় গাড়িটির মালিক। গাড়িটির অনুকূলে চট্টমেট্রো-থ-১২-৮০৭৭’ নতুন নম্বর দেওয়া হয়। বিআরটিএ নিবন্ধন ব্যবহার করে প্রতারণা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন বিআরটিএ’র এক পদস্থ কর্মকর্তা। এদিকে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর বিআরটিসি মোড়ে গাড়িটি আবারো ক্যামেরায় ধরা পড়ে। তবে গাড়িটির পেছনে আগের লেখা ‘চট্টমেট্রো-থ-১১-৫৩৭১’ নম্বরটি কালিদিয়ে মুছে দেওয়া হয়েছে মাত্র। খবর : দৈনিক আজাদী।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘বৈধ গাড়ি রাস্তায় চলাচল করলে সরকার রাজস্ব পেলেও ট্রাফিকের তেমন লাভ থাকে না। সড়কে অবৈধ গাড়ি চলাচল করলেই ট্রাফিকের লাভ বেশি। যে কারণে সমালোচনা চললেও অবৈধ গাড়ি রাস্তায় থাকে। বিশেষ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ক্ষেত্রে প্রাইভেট ও নিলামের গাড়িগুলো নির্ধারিত মাসোহারার মাধ্যমে চলে। ট্রাফিক মাসোহারা না নিলেতো গাড়িগুলো রাস্তায় নামার সাহস পেতো না। কারণ গাড়িগুলো নগরীতে অবৈধ। বিশেষ করে নিলাম গাড়িগুলোতে বিআরটিএ’র কোন কাগজপত্র থাকে না। কিন্তু এধরনের অসংখ্য গাড়ি ট্রাফিকের সামনেই পুরো মেট্রো এলাকা দাপিয়ে বেড়ায়।’
এ শ্রমিক নেতা বলেন, ‘কখনো কাগজপত্রহীন অবৈধ গাড়ি ডাম্পিং হলেও কতিপয় অফিসারদের ম্যানেজ করে গাড়িগুলো বের হয়ে যায়। অনেক গাড়িতে ট্রাফিক কর্মকর্তাদের নাম ও মোবাইল নাম্বারও লেখা থাকে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘অবৈধ যেকোন গাড়ির বিরুদ্ধে নগরীতে অভিযান চলমান রয়েছে। বিশেষ করে অন্য জেলায় নিবন্ধিত টেক্সি ও নিলামের গাড়িগুলো নগরীতে চলাচলের সুযোগ নেই। ট্রাফিকের চোখে পড়লেই অবৈধ এসব গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়, আটক করা হয়।’
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2019 - 2024 PassengerVoice | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Developed By Muktodhara Technology Limited.
পাবলিক মতামত